অবশেষে
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ
ডাক্তার সাহেব আপাতত চেকাপে’র পর ওষুধ দিলেন। তারপর মিসেস কেরামত দুশো টাকা কম দিলে ডাক্তার একটু বিরক্তিকর চাউনি দিলেন।
ভিজিট তো দিলেন না । আবার ঔষধের দাম দুশো টাকা কম। আমরা মফস্বলের ডাক্তার বলে?
মিসেস কেরামত দুশো টাকা কম দিয়েই ছাড়লেন। বললেন, যাবার সময় ভিকুয়ার কাছে ঝাড়ফুঁক করিয়ে নেবেন । ওখানে ভিকুয়ার সম্মানী দুশো টাকা।
ভিকুয়া?ওই ভণ্ড কবিরাজটা?
তাহলে আমার এখান থেকে ওষুধ নিলেন যে?
সব রোগ কি আপনের ওষুধে ছাড়বে? কিছু কিছু রোগ আছে ওইটা ঝাড়ফুঁক দিয়েই ভালো করতে হবে। আপনি বিশ্বাস করেন, বা না করেন।
মিসেস কেরামত দুশো টাকা হাতে নিয়ে ভিকুয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন।
মিসেস কেরামত ভিকুয়ার বাড়ি পৌঁছুলেন ।
দরজাটা বন্ধ ছিলো। একটা ছেলে বেরুলো।
কারে চা-ন?
কবিরাজ বাবাকে এ…এই কয়টা টাকা আর এই পানির বোতলডা দিয়ে আমার কথা বলবে। ছেলেটা শরীর চুলকে বললো, নানায় ত বিমারে পড়ছে।
তুমি আমার কথা বলবে, ঠিকাছে?
টাকাটা নাকের কাছে নিয়ে ঘ্রাণ নেয়। নয়া টাকার গন্ধটা বেশ। মাথা খোলাসা হয়ে যায়।
ভেতরে ছেলেটা চলে যাচ্ছে।
ওর নাম ঝুটন। মাকে নিয়ে নানার এখানে থাকে। বাবাকে দ্যাখেনা চৌদ্দ বছর। নানার এখানে তাই সব কিছু যেন থেমে গেছে।নানার সংসারটাও এলোমেলো। প্রথম বৌ পুরনো ভালোবাসার জেরে সজলের হাত ধরে আশুলিয়া পাড়ি দিয়েছে।
বর্তমানে দ্বিতীয়বারের আলফুকে ঘরে এনেছে। আলফুর একমাত্র কন্যার একটি ছেলে ঝুঁটন…পিতৃহারা। কন্যাও ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্যহীন। জীবনের যাবতীয় ঘটনা থেকে বিচ্ছিন্ন।
সিরিয়ালে আঠারো।
মিসেস কেরামতের ডাক পড়ে ভিকুয়ার ওখানে।
বিশেষ একটা গ্লাসে ঠান্ডা পানি চেয়ে কী যেন পড়া শুরু করে ভিকুয়া। কয়েকটা বটিকার কৌটোও দেয়।
তারপর বলে, বাসাত যাওনের সময় একজন এম বি বিএস ডাক্তার দেখাইবা।
কেন। আপনার হাতে আর কোনো চিকিৎসা নাই?
না।
তিনদিন পর।
ডাক্তারের চেম্বারে ভিকুয়া বসে আছে ।
মিসেস কেরামত ভিকুয়ার দিকে তাকাতেই ভিকুয়া জানতে চাইলো, আপনের বেথা যাই নাইককা?
তার আগে বলেন ডাক্তারের এখানে আপনি কেন আসছেন?
প্রচণ্ড কাশছে ভিকুয়া। বুকে হাত দিয়ে। চোখ মেলে তাকাতে কষ্ট হচ্ছিলো।