গোলাম কবির’র কবিতা
খুব ভালো আছি, মা!
যখন তুমি মোবাইলে জিজ্ঞাসা করো
কেমন আছি? আমি তখন ভয়ে ভয়ে
অনেক সময় মিথ্যে করে বলি,
“খুব ভালো আছি, মা! ”
আসলে কী ভালো থাকা যায়
কখনো এই দারুণ দূঃসময়ে!
যখন রাস্তায় বেরুলেই দেখি
সব নষ্টের উৎসব চলছে ধুন্ধুমার,
কোনো বালক বয়সী ছেলের হাতে
জ্বলতে দেখি উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে
ধোঁয়ার কুণ্ডুলি উড়ছে আকাশে
অথবা গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে
খিস্তিখেউরে মগ্ন কোনো যুবক
তাকে ঘিরে গোল করে দাঁড়ানো
অন্য যুবাবয়সীদের সাথে!
যখন দেখি চোখের সামনেই
বুড়িগঙ্গা নদীটা নষ্ট হয়ে গেলো,
যার জলের রঙ এবং গন্ধকে
কেবল শহরের ড্রেনের সঙ্গেই
তুলনা করা যায়!
যখন এই শহরের মানুষগুলো
ভীষণ রকম স্বার্থপর ও আত্মকেন্দ্রিক
হয়ে গেলো, কারো হৃদয়ে কোনো
সবুজের ছিটাফোঁটাও অবশিষ্ট
রইলো না, এমন কী বিশাল বট,
তেঁতুল, কৃষ্ণচূড়া গাছেরা সব
বনসাই হয়ে বহুতল বিল্ডিংগুলোর ড্রয়িংরুমে আশ্রয় নিলো !
এমনই দারুণ দূঃসময়ে কী
ভালো থাকা যায়, তুমিই বলো!
কিন্তু তুমি তো মা, তোমাকে কী
বলা যায় আমি ভালো নাই মামনি।
তাহলে তো তোমার কষ্ট পাওয়ায়
নিজেই ঝলসে যাবো।
তাই, অনেক সময় মিথ্যে করে হলেও তোমায় বলি, “খুব ভালো আছি, মা!”